পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ সমূহ

সৌরজগতের সকল গ্রহ-উপগ্রহের মধ্যে মানুষের বসবাসযোগ্য একমাত্র গ্রহ হলো পৃথিবী। এই পৃথিবীর একেকটি প্রান্তর ভিন্ন ভিন্ন রূপে সজ্জিত। প্রতিটি দেশেরইকিছু আকর্ষনীয় ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে পৃথিবীর এমন কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক সৌন্দর্যে সয়ংসম্পূর্ণ। মানুষ বরাবরই সৌন্দর্যের পাগল। বিশেষ করে ভ্রমণপিয়াসীরা তাদের ভ্রমণ গন্তব্যের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর সন্ধান করে। তাই বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ সমূহ এবং সেগুলো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী তুলে ধরা হলো এই লেখাতে।

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর দেশ সমূহ

পৃথিবীর ২০৬ টি দেশের মধ্যে প্রায় সবগুলো দেশই অত্যন্ত মনোরম সৌন্দর্যে ভরপুর। তবে তন্মধ্যে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সেরা ১০তি সুন্দর দেশের তালিকা প্রনয়ণ করেছি। চলুন সেসকল দেশ এবং তাদের সৌন্দর্যের সাধারন তথ্যাবলী জেনে নেওয়া যাক:

১) কানাডা

উত্তর আমেরিকার উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা জুড়ে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ঘেরা দেশ কানাডা। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে উত্তর দিকে আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই দেশটি। আয়তনের দিক থেকে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে অনেকাংশে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই দেশে একইসাথে বন্য, শহুরে এবং রোমান্টিক স্থানের দেখা পাওয়া যায়। দেশটিতে রয়েছে অসংখ্য নদী, বরফ, পাহাড় ও সুবিশাল বন।

কানাডার সীমান্তবর্তী অঞ্চলেই রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এই নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি দেখতে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি মানুষের সমাগম হয়। এই দেশের প্রধান আকর্ষণীয় শহরগুলো হলো- অটোয়া, মন্ট্রিওল, ভ্যানকুভার এবং টরন্টো ইত্যাদি। এখানে রয়েছে পৃথিবীর বিখ্যাত কিছু স্থাপত্য নিদর্শন। পর্যটকদের জন্য আরো কিছু জনপ্রিয় গন্তব্য হলো ক্যালগারি, মন্ট্রিল, হ্যালিফ্যাক্স, কুইবেক সিটি ইত্যাদি। এই কানাডাতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি লেক রয়েছে। সৌন্দর্যমন্ডিত এই দেশটি ৪টি ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্যে সজ্জিত হয়। পর্যটকদের মতে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ হলো কানাডা।

২) সুইজারল্যান্ড

ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত অতুলনীয় সৌন্দর্যের দেশ হলো সুইজারল্যান্ড। এটিকে পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গও বলা হয়ে থাকে। আধুনিকতায় ভরপুর নিখুঁত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভয়ারণ্যে ঘেরা এই দেশের প্রতিটি স্থান। আয়তনে ছোট হলেও এই দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণ। পাহাড়, পর্বত, লেক, ভ্যালি এবং বনাঞ্চলঘেরা এই দেশটি সত্যিই অসাধারণ। সুইজারল্যান্ডের মোট আয়তনের ৭০ শতাংশ ঘিরে রয়েছে আল্পস পর্বতমালা, যা দেশটির সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পর্বতের এই দেশটিতে সবচেয়ে উচু পর্বতের নাম মন্টি রোজা। এছাড়াও সুপরিচিত ম্যাটারহর্ন এবং আইগার এর চূড়াগুলো সারা বছর তুষারে আবৃত থাকে, যা লাখো পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিশেষভাবে।

এখানে আল্পাইন পর্বতের পাশে লেক জেনেভা, লেক লুসার্নসহ অন্যান্য সুন্দর লেক গুলোতে নৌকা ভ্রমণ এবং মনোরম পরিবেশে পায়ে হেঁটে যাওয়া, আল্পস পর্বতে অ্যাডভেঞ্চার, হাইকিং রুট, স্কি এলাকা, এবং প্রাকৃতিক ট্রেন ভ্রমণ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এছাড়াও এই দেশটিতে ১১ টি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে। পাহাড়ের হালকা ঢালু মাঠ, মাঠে চড়ানো গরু এবং বন্য ফুলে প্রস্ফুটিত তৃণভূমি নজর কাড়তে সক্ষম। দেশের প্রতিটি শহরের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র ও ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন এবং অত্যাধুনিক নাগরিক সুবিধা এটিকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে। 

৩) নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি অত্যন্ত সুন্দর দেশ। এটি দক্ষিণ আল্পস পাহাড়ের পাশে ওশেনিয়া মহাদেশের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। নির্মল সৈকত থেকে শুরু করে তুষার-ঢাকা চূড়া গুলো এই দেশের প্রধান আকর্ষণ। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি পৃথিবীর প্রধান সৌন্দর্যমন্ডিত নিদর্শন গুলোর একটি। সমুদ্র ও সবুজ পাহাড় ঘেরা এই দেশটি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি দেশ। রয়েছে ঘন বন, পাহাড়, সমুদ্র সৈকত, গ্লাসিয়ার, উষ্ণ অঞ্চল, চমৎকার সব গ্রাম আর অপূর্ব বন্য জীবন। 

এই দেশের মিলফোর্ড সাউন্ডের মতো আকর্ষণীয় ফ্লোর্ডগুলোর পাশাপাশি ফিওর্ডল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক উচ্চ ক্লিফ এবং টম্বলিং জলপ্রপাতগুলোর একটি শ্বাসরুদ্ধকর পটভূমি প্রদান করে। এছাড়াও রোটোরুয়ার ভূ-তাপীয় বিস্ময়, বুদবুদ করা মাটির পুল এবং গিজার, আগ্নেয়গিরী ইত্যাদি বহু পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চারের জন্য এটি একটি উপযুক্ত স্থান হিসেবে গড়ে উঠার অন্যতম কারণ হলো, এখানে থাকা অসংখ্য পেঙ্গুইন, সীল, তিমি এবং ডলফিন সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী। দেশের কোরোমন্ডেল উপদ্বীপের সোনালী সমুদ্র সৈকত এবং ওয়েটোমোর গ্লোওয়ার্ম আলোকিত গুহা- দেশের মন্ত্রমুগ্ধতায় অবদান রাখে।

৪) ইতালি

পশ্চিমা সংস্কৃতি ও সভ্যতার সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ‘ইতালি’ দেশটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে একটি। এটি দক্ষিণ ইউরোপের একটি দেশ। এই দেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ প্রতিবছর ইতালিতে ঘুরতে আসেন। ইতালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, সুস্বাদু খাবার, ইতিহাস, স্থাপত্য, শিল্প এবং শৈলী ইত্যাদি সামগ্রিক বিষয়বস্তু সকল পর্যটকদের মুগ্ধ করতে সক্ষম। নানা ভাস্কর্য আর শৈল্পিক নিদর্শন ছড়িয়ে আছে এই দেশের প্রতিটি কোণায়।

এই দেশেই রয়েছে ইউরোপের সর্বোচ্চ শিখর হোয়াইট মাউনটে। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটি -ও এই ইতালির মধ্যেই অবস্থিত। এই দেশেই ভেনিস, ফ্লোরেন্স এবং রোমের মতো বিখ্যাত সব শহরগুলো রয়েছে। এই শহরগুলোর সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে ইতালিকে রোমান্টিক সৌন্দর্যের দেশও বলা হয়। বর্তমানে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় নিদর্শন আছে এই ইতালিতেই। 

৫) নরওয়ে

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য নরওয়ে একটি স্বপ্নবিলাসী দেশ। কল্পনার জগতের মতই সুন্দর এই দেশটিকে সূর্যের দেশও বলা হয়। শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো নরওয়ে। কারণ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই দেশে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী সূর্যের আলো থাকে। এই দেশের সুউচ্চ পর্বতমালা, জমকালো উপত্যকা, লোফোটেন দ্বীপপুঞ্জ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভিজ্যুয়াল সিম্ফনি, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান লীলাভূমি প্রতিটি দর্শনার্থীকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। দ্য সেভেন সিস্টারস এবং ব্রাইডাল ভিল হলো এই দেশের প্রধান আকর্ষণীয় জলপ্রপাত গুলোর মধ্যে অন্যতম। এগুলো হিমবাহ-খোদাই করা গিরিখাত থেকে নেমে এসেছে।

পর্বতে ঘেরা এই দেশটির রাজধানী হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ জাদুকরী শহর- ওসলো। রূপকথার গল্পের মতোই সুন্দর ও আকর্ষণীয় সমুদ্রখাত, তুষার ঢাকা বিস্তৃত মালভূমি আর অবিশ্বাস্য সুন্দর সব পর্বতমালা আছে দেশটিতে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের কাছে এই দেশটি মাছ ধরা, হাইকিং এবং স্কিইং, লিলহ্যামারের অলিম্পিক রিসোর্টের জন্য জনপ্রিয়।

৬) আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ড পৃথিবীর শেষ প্রান্তে উত্তর আটলান্টিকের দূরে অবস্থিত নর্ডিক দ্বীপের ছোট একটি দেশ। এই দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মহাকাশ থেকে পেইন্টিংয়ের মতো মনে হয়। কারন এখানে বরফ এবং আগ্নেয়গিরির আগুন একত্রিত হয়ে মনোঃমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে। দেশটিতে একদিকে রয়েছে প্রায় ১,২০০ টি হিমবাহের সমষ্টি। অন্যদিকে রয়েছে ১৩০ টির মতো আগ্নেয়গিরি, যার ৩০ টি এখনো সক্রিয়। দেশটি তার পরাবাস্তব দৃশ্যাবলী, হিমবাহ, ভূ-তাপীয় বিস্ময় এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সু-ভারসাম্যপূর্ণ মিশ্রণ দ্বারা পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

এই দেশের রেইকিয়াভিক শহরে রয়েছে মানুষ সহ প্রায় ২০০ টি স্তন্যপায়ী প্রাণীর লিঙ্গের প্রদর্শনী সমৃদ্ধ বিশেষ লিঙ্গ জাদুঘর। এই দেশটি তিমি মাছের প্রদর্শনীর জন্য বিখ্যাত। আইসল্যান্ডের তিন চতুর্থাংশ রুক্ষ হওয়ায় কোন বনাঞ্চল নেই, তবুও দেশটির প্রকৃতি যে কাউকে মুগ্ধ করতে সক্ষম। শান্তিপ্রিয় এই দেশটিতে নিজস্ব সামরিক বাহিনী পর্যন্ত প্রয়োজন হয় না। আইসল্যান্ডের প্রায় সকল পরিবারই পশু পালন করে। 

৭) আয়ারল্যান্ড

আয়ারল্যান্ড হলো উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি ছোট্ট দেশ, যার আয়তন মাত্র ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর দক্ষিণে ও পশ্চিমে রয়েছে আটলান্টিক মহাসাগর। চারিদিকে জলরাশির উথাল-পাথাল, অসংখ্য পাহড়-পর্বত, বেশ কয়েকটি নদী এবং অনেক হ্রদে সমৃদ্ধ এই দেশটি। আয়ারল্যান্ডের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, মনোমুগ্ধকর সবুজ ল্যান্ডস্কেপ এবং অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় স্থান, প্রাকৃতিক বিস্ময় ইত্যাদি এই দ্বীপ দেশটিকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

১৭, ১৮ এবং ১৯ শতকে- জ্ঞান বা বিদ্যা, নব্য ধ্রুপদী এবং নব্য গোথিক শৈলীতে নির্মিত কাসল ওয়ার্ড, কাসলটাউন হাউস, বেনট্রি হাউস ইত্যাদি মহিমান্বিত বাসগৃহ গুলো পর্যটনদের অন্যতম আগ্রহের কারণ। আয়ারল্যান্ডের মানুষের ব্যবহারও খুবই ভদ্র, নম্র ও অতিথিপরায়ণ। এদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলো হলো ডাবলিন, গালওয়ে, উইকলো পর্বতমালা, কিলার্নি, কর্ক, ট্রলি, ওয়াটারফোর্ড, ডিঙ্গল উপদ্বীপ, ওয়েস্টপোর্ট, আরান দ্বীপপুঞ্জ, দ্য ক্লিফস অফ মোহের, কোনেমারা জাতীয় উদ্যান, ইনিশোভেন উপদ্বীপ ইত্যাদি।

৮) চীন

‘দ্যা গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’ -এর দেশ চীন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। চীন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। চীনের পূর্ব উপকূল থেকে পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত আছে ‘দ্যা গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’ নামক প্রাচীরটি। চীন একটি পর্বতময় দেশ এবং চীনের মোট আয়তনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। চীনের উল্লেখযোগ্য পর্বতমালার মধ্যে রয়েছে মাউন্ট হুয়াংশান, মাউন্ট তাইশান, মাউন্টেন হেনশান এবং মাউন্ট এভারেস্ট।

বৃহত্তম এই দেশটির প্রতিটি কোণার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের আকৃষ্ট করে নানাভাবে। 

৯) অস্ট্রেলিয়া

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে স্থান পাওয়া আরেকটি উল্লেখযোগ্য দেশ হলো অস্ট্রেলিয়া। আইকনিক সিডনি অপেরা হাউস থেকে শুরু করে দুর্দান্ত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পর্যন্ত, অস্ট্রেলিয়া দেশটি একটি বৃহৎ প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ, বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে অবস্থিত ক্যাঙ্গারু দ্বীপটি একটি সত্যিকারের প্রাকৃতিক আশ্চর্যভূমি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রাকৃতিক বিস্ময়, মরুভূমি, সৈকত, বোটানিক গার্ডেন এবং জাতীয় উদ্যানগুলি ছুটির সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিশাল প্রবাল প্রাচীর রয়েছে। এছাড়াও লর্ড হাও দ্বীপ, আয়ারস পর্বত, টুয়েলভ অ্যাপসটেলস, কাকাডু, ওলগাস, আউটব্যাক, সিডনি অপেরা হাউস, গ্রেট বেরিয়ার রিফ, এনা ক্রিক কেটেল স্টেশন, শার্ক বে, ডায়েন্ট্রি রেইন ফরেস্ট, দ্যা পিনাকলস ইত্যাদি হলো অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত স্থান।

১০) দক্ষিণ আফ্রিকা

আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দেশটি আফ্রিকার সেরা সাফারি গন্তব্যস্থলের একটি। এই দেশটিতে রয়েছে অসংখ্য ন্যাশনাল পার্ক যেখানে হাতি, মহিষ, গন্ডার, সিংহ এবং চিতাবাঘ একসাথে দেখা যায়। সমগ্র দেশটি ইতিহাস, সংস্কৃতি, খাবার, বন্যপ্রাণী এবং সমুদ্র সৈকতের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার বোল্ডারস বিচেই পেঙ্গুইনের দেখা মেলে। এই দেশের বৃহত্তম শহরগুলো হলো কেপটাউন ও জোহানেসবার্গ। 

ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের দিক থেকে কেপটাউন বিশ্বের সুন্দরতম শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। একইসাথে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে কেপ পয়েন্ট, টেবিল পর্বতসহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

১১) ব্রাজিল

জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের দিকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান একটি দেশ ব্রাজিল।‌ এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশ। ব্রাজিলের ভূপ্রকৃতি অনেক বেশি বৈচিত্র্যময়। এখানে পাহাড়, পর্বত, সমভূমি, উচ্চভূমি, চারণভূমি প্রভৃতি বৈচিত্র্যময় ভূভাগ বিদ্যমান। বিশ্বের অন্যতম জটিল নদী বৈচিত্র্য রয়েছে এই ব্রাজিলে। ঘন ঘন নদীর এই দেশে উল্লেখযোগ্য নদীর মধ্যে রয়েছে আমাজন। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী ও নিষ্কাশিত পানির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী।

এছাড়া নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময় স্থাপত্য নিদর্শন, সবুজ পাহাড় ও সমতল ভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ইত্যাদি নিদর্শন গুলো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। 

শেষকথা

উপরোক্ত দেশগুলোই বর্তমানে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং বিশ্বের সবচেয়ে সবচেয়ে সুন্দর দেশ হিসেবে পরিচিত। এই সকল দেশগুলোর প্রাকৃতিক জাঁকজমক এবং সাংস্কৃতিক গভীরতা অনেক বেশি বৈচিত্র্যময়। এছাড়াও ভারত, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি অন্যান্য সুন্দর দেশগুলোও ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।

Scroll to Top